HomeGovt Schemesহকিং কেন নোবেল পায় নি.?শেষ পর্যন্ত নোবেল পুরস্কার পাওয়া হলো না স্টিফেন...

হকিং কেন নোবেল পায় নি.?শেষ পর্যন্ত নোবেল পুরস্কার পাওয়া হলো না স্টিফেন উইলিয়াম হকিংয়ের

WhatsApp Group Join Now
Instagram Profile Join Now
YouTube Channel Subscribe

Why didn’t Hawking win the Nobel Prize? Stephen William Hawking


Smart Update24,By Syed Mosharaf Hossain: শেষ পর্যন্ত নোবেল পুরস্কার পাওয়া হলো না স্টিফেন উইলিয়াম হকিংয়ের। মারা যাওয়ার পর তাঁর নোবেল পুরস্কার পাওয়ার সব সম্ভাবনাও পুরো বাদ হয়ে গেল। কারণ, নোবেল পুরস্কার পাওয়ার প্রথম শর্তই হলো জীবিত থাকা!

আর একটু সময় পেলে হয়তো হকিং নোবেল পুরস্কার পেলেও পেতে পারতেন। বছর খানেক আগের কিছু কিছু ঘটনা ও পরীক্ষার ফলাফল দেখে মনে হয়েছিল ২০১৮-১৯ সালের মধ্যে ঘটনাটি ঘটতেও পারে।

নোবেল পুরস্কার নিয়ে হকিংয়ের আগ্রহের কথা অনেক শোনা যায় সর্বশেষ বছর কয়েক। এক বড় মিলনায়তনে বক্তৃতা করছেন হুইলচেয়ারের বিজ্ঞানী। স্লাইডের পর স্লাইড আসছে, কণ্ঠস্বর শোনা যাচ্ছে। হঠাৎ করে সবাই নড়েচড়ে বসলেন। কারণ, পর্দায় বড় করে একটা নোবেল পুরস্কারের ছবি! শোনা গেল, হকিংয়ের ধাতব কণ্ঠস্বর— যদি কম ভরের কৃষ্ণগহ্বর আবিষ্কৃত হয়, তাহলেই আমি নোবেল পুরস্কার পেয়ে যাব।’


আলফ্রেড নোবেল যখন তাঁর পুরস্কারের উইল করেছিলেন, তখন সেখানে কয়েকটি শর্ত জুড়ে দেন। বড় অংশ জুড়ে ছিল ‘ব্যবহারিকভাবে প্রমাণিত’—এই বাক্যটি। আর এ কারণে তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানীদের এই পুরস্কারের জন্য অপেক্ষা করতে হয় দীর্ঘদিন। আইনস্টাইনও এর ব্যতিক্রম ছিলেন না। নোবেল কমিটি আইনস্টাইনকে পুরস্কার দিয়েছে ১৯২২ সালে, ১৯১৯ সালের সূর্যগ্রহণের সময় আর্থার এডিংটনের পর্যবেক্ষণের পর এবং শেষ পর্যন্ত পুরস্কারের বর্ণনায় অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে আলোর তড়িৎ ক্রিয়ার ব্যাপারটাও জুড়ে দেন। বিশ্বখ্যাত টাইম ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক মন্তব্যে হকিং ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে বলেছিলেন, তিনি এমনভাবে কাজ করছেন, যাতে কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে তাঁর কাজটা সত্য বলে প্রমাণিত হতে পারে। একই বছর আগস্টে নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত এক নিবন্ধের ফলাফল সত্য হলে হকিংয়ের এই অপেক্ষার পালার অবসান হতে পারত।

Google News View Now

নোবেল পুরস্কার ছাড়া আর সব পুরস্কার ও স্বীকৃতি তিনি পেয়েছেন। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর একটি আবক্ষ মূর্তি আছে, তাঁর নামে একটা ভবনও আছে। দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনেও তাঁর একটি মূর্তি আছে। এল সালভাদরের রাজধানী সান সালভাদরের বিজ্ঞান জাদুঘরটির নাম স্টিফেন হকিং বিজ্ঞান জাদুঘর। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের রানি তাঁকে অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার এবং অর্ডার অব দ্য কম্প্যানিয়ন অনারে ভূষিত করেছেন। আমেরিকার আগের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তাঁর গলায় ঝুলিয়ে দিয়েছেন প্রেসিডেনশিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম পদক। পেয়েছেন বেশ কটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার, যার মধ্যে রয়েছে তত্ত্বীয় পদার্থবিদদের সর্বোচ্চ সম্মান আলবার্ট আইনস্টাইন পদক। ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দিয়েছে, তাঁর পুরোনো অক্সফোর্ডসহ। আর ১৯৭৯ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় হকিংকে বানায় গণিতের লুকাসিয়ান প্রফেসর, একসময় যে পদ অলংকৃত করেছিলেন স্যার আইজ্যাক নিউটন। ২০০৯ সালে আবার এই পদে যোগ দেন। এর আগে ১৯৭৪ সালেই রাজকীয় বিজ্ঞান সমিতির ফেলো হয়েছেন। সর্বশেষ ২০১৫ সালে পেয়েছেন বিবিভিএ ফাউন্ডেশন ফ্রন্টিয়ার অব নলেজ অ্যাওয়ার্ড।


সত্যি কথা বলতে, কেবল নোবেল পাওয়াটাই বাকি ছিল তাঁর, সেটি আর হবে না!

হকিংকে নোবেল পুরস্কার দিতে না পারার একটা কারণ হলো বাস্তবে একটা ব্ল্যাকহোল থেকে হকিং বিকিরণ বের হয়ে আসছে কি না, সেটা মাপার মতো কারিগরি দক্ষতা এখনো মানুষের আয়ত্ত হয়নি। তাহলে বাকি থাকে ল্যাবরেটরিতে একটা ব্ল্যাকহোল বানানো! সেটার একটা সম্ভাবনা ছিল ইউরোপের সার্নে অবস্থিত লার্জ হেড্রন কলাইডারে। সেখানে কণাদের মারামারি-ধাক্কাধাক্কিতে খুবই ছোট ব্ল্যাকহোল সৃষ্টি হতেও পারে। যদিও এখনো তার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।

একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল কিছুদিন আগে। ১৯৮০ সালে কানাডার ভ্যাঙ্কুভারে ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানী বিল আনরু হকিং বিকিরণ পরীক্ষা করার একটি ভিন্ন পদ্ধতি প্রস্তাব করেন। তিনি এমন একটি মাধ্যমের কথা ভাবলেন, যা কিনা ত্বরিত গতিতে চলমান। জলপ্রপাতের বেলায় এটি দেখা যায়। জলপ্রপাতের একটি নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছালে কোনো সাঁতারুই এমন গতিতে সাঁতার কাটতে পারে না, যা জলপ্রপাতের আকর্ষণকে নাকচ করতে পারে। ফলে সে যেমন সাঁতারু হোক না কেন, তাকে জলপ্রপাতে আত্মসমর্পণ করতেই হয়। আনরুর বক্তব্য ছিল, এটিই একটি ঘটনা দিগন্ত। কাজেই শব্দের জন্য যদি কোনো ‘ব্ল্যাকহোল’ বানানো যায়, তাহলেই হকিং বিকিরণ সেখানেও দেখা যাবে।


২০১৬ সালে বিজ্ঞানী স্টেইনহওয়ার ঠিক এই কাজটা করেন। তিনি রুবিডিয়াম পরমাণুর একটি মেঘমালার তাপমাত্রাকে নিয়ে গেলেন পরম শূন্যের (-২৭৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস) সামান্য ওপরে। ফলে রুবিডিয়াম পরমাণুর মেঘমালাটি চলে যাচ্ছে বোস-আইনস্টাইন ঘনায়ন (BEC-Bose-Einstein Condensate) নামের এক কোয়ান্টাম স্তরে। সেগুলোকে দিয়ে বানানো হলো সিগারের মতো লম্বা একটি আকৃতি, যা কিনা মাত্র কয়েক মিলিমিটার লম্বা। এতে শব্দের গতিবেগ দাঁড়াল সেকেন্ডে আধা মিলিমিটারের মতো। তারপর তিনি ওই পরমাণুগুলোকে ত্বরণ দিয়ে এমন অবস্থায় আনলেন, যার ফলে কোনো কোনো কণার গতিবেগ হয়ে গেল সেকেন্ডে এক মিলিমিটারের বেশি। ফলে তৈরি হয়ে গেল শব্দের জন্য একটি ঘটনা দিগন্ত! আর ওই স্বল্প তাপমাত্রায় বিইসি খুবই দুর্বল কোয়ান্টাম চাঞ্চল্যের ভেতর দিয়ে যায়। এর ফলে সেখানে তৈরি হয় শব্দের জোড়া কণা, ফোনোন। ব্ল্যাকহোলে যেমনটি হয় ফোটন কণা। আর এই ফোনোন কণার একটা হারিয়ে যাচ্ছে বিইসির এক পাশে, আর অন্য পাশে আবির্ভূত হচ্ছে অপরটি। স্টেইনহওয়ারের মতে এর একটাই অর্থ, বিইসি থেকে বের হয়ে আসছে হকিং বিকিরণ!


বিজ্ঞানীরা স্টেইনহওয়ারের এই ব্যাপারটিতে নিশ্চিত হতে পারেননি। তবে, সবাই এটি মেনেছেন যে স্টেইনহওয়ারের পরীক্ষা সফল হওয়ার মানেই হচ্ছে হকিং বিকিরণ প্রমাণিত হওয়া। আর তাই অনেকেই এই পরীক্ষণটি নিজেরা করবেন বলে ঠিক করেছেন, অনেকেই শুরুও করেছেন। কিন্তু গত দেড় বছরে আর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।


 

WhatsApp Group Join Now
Google News View Now
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular