রায়গঞ্জের এক যুবক টোটোতেই ভ্রাম্যমাণ রেস্তোরাঁ বানিয়ে নজির গড়লেন
রায়গঞ্জ কর্নজোড়া পার্কের সামনে এই বসছেন মৃদুলবাবু। বেচাকেনা ভাল হওয়ায় আশার আলো দেখছেন। মৃদুলবাবুর তৈরি ডিশ খেয়ে খুশি এলাকার খাদ্যরসিকরাও। টোটোতে একটি ভ্রাম্যমাণ রেস্তোরাঁ বানিয়ে ফেললেন রায়গঞ্জ বোগ্রামের যুবক মৃদুল রায়। তাঁকে সহযোগিতা করছেন তার স্ত্রী রাখী দেব সিংহ।
রায়গঞ্জ বোগ্রামের বাসিন্দা মৃদুল ব্যাঙ্গালুরু-সহ ভিন রাজ্যে হোটেল মানেজমেন্টে কাজ করতেন।সেখানে তিনি চাইনিস, ইন্ডিয়ান-সহ বিভিন্ন ধরনের রান্না শিখেছেন। হোটেলে থাকাকালীন তাঁর সংসার ভালভাবেই চলে যেত।কিন্তু লকডাউনের কারনে সবকিছুই উলটপালট হয়ে যায়। লকডাউনের পর তিনি বাড়িতে চলে আসেন। দীর্ঘদিন কার্যত বসেই ছিলেন। কিন্তু হাঁড়িতে টান পড়তেই শুরু হয় ভাবনা।
মৃদুল ঠিক করেন অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সুস্বাদু রান্নাগুলি ফেরি করবেন। তাঁকে সাহস জোগান স্ত্রী রাখী দেব সিংহ। শুরু হয় লড়াই।টোটোতেই একটি ছোটখাটো রেস্তারাঁ তৈরি করেন মৃদুল। সেখানেই ইন্ডিয়ান এবং চাইনিজ বিভিন্ন ধরনের ডিস তৈরি করে বিক্রি করা চলতে থাকে।
মৃদুলবাবুর বাড়ি থেকে খুব কাছেই কর্নজোড়া পার্ক। লকডাউনেও সেই পার্ক খোলা আছে। মৃদুলবাবু সেখানেই দোকান দেবার সিদ্ধান্ত নেন।হোটেল, রেস্তোরাঁ যখন বন্ধ তখন মৃদুলবাবুর তৈরি সুস্বাদু ডিশ হাতের কাছে পেয়ে খাদ্যরসিকরাও বেজায় খুশি। বিকাল পাঁচটা থেকে পার্ক খোলে।
MORE: পশ্চিমবঙ্গের পাখি প্রেমী অমরেশ মিত্র ও তার সংগ্রহ করা পাখির ডিম
মৃদুলবাবুর দোকান নিয়ে তার কিছুক্ষণ আগেই সেখানে হাজির হন। পার্ক খোলার আগে থেকেই খাদ্যরসিকরা সেখানে হাজির হন। লোকজন আসার পর থেকেই দোকান জমজমাট।সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত চলে তাঁর দোকান। তবে করোনা সর্তকতা মেনেই চলছে এই দোকান, জানালেন মৃদুলবাবুই
দোকানের সামনে ক্রেতাদের মাস্ক পরার জন্য আবেদন করেছেন। যদি কোনও ক্রেতা মাস্ক না পড়ে আসেন তবে তাঁর কাছে জিনিস বিক্রি করা হচ্ছে না। মৃদুলবাবুর এই কাজে পাশে থেকে সহায়তা করছেন তাঁর স্ত্রী রাখী দেব সিংহ।
মৃদুলবাবু জানান, লকডাউনে বাড়ি ফিরে সংসার চালানোর জন্য বেশ খানিকটা চাপে পড়ে গিয়েছিলেন। স্ত্রী এবং পরিবারের সদস্যদের কাছে এই ব্যবসার কথা জানালে তারা তাঁকে নিরাশ না করে উৎসাহ দিয়েছেন। তাদের উৎসাহে টোটোতেই একটি ছোট্ট হোটেল তৈরি করে ব্যবসা শুরু করেছে। খদ্দের আসছেন, চাহিদা আছে, সবমিলিয়েই দিনবদলের আশা দেখছেন মৃদুল।