ইঞ্জিনিয়ারিং (Engineering) শিক্ষার্থীদের বাস্তবতা
এক উচ্চ মাধ্যমিক ছাত্রের মা বললেন – “ছেলে কে toto কিনে দেবো,তাও ইঞ্জিনিয়ারিং (Engineering) পড়াবো না” আমি বললাম : কেনো??.তার প্রধান অভিযোগ হলো – প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ ইঞ্জিনিয়ার (Engineer) বেরোচ্ছে,আজ কাল ইঞ্জিনিয়ার এর কোনো ভ্যালু নেই ,কোনো কোয়ালিটি নেই .যে কেউ ইঞ্জিনিয়ার (Engineer) হয়ে যাচ্ছে।তারপর maximum ইঞ্জিনিয়ার jobless ।তারপর job করলেও ৮-১০ হাজার টাকার।তারপর ইঞ্জিনিয়ার রা নেশা করে।এই সব আর কি !!
এর জন্যে কি ইঞ্জিনিয়ার (Engineering) রাই দায়ী ???
লক্ষ লক্ষ ইঞ্জিনিয়ার প্রতি বছর পাস আউট হচ্ছে এবং jobless: আপনি যদি লক্ষ্য করেন লাস্ট ১৫ বছরে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সংখ্যা প্রায় ৫ গুন বেড়েছে,কিন্তু সেই অনুপাতে ভারতবর্ষে ইন্ডাস্ট্রি বেড়েছে কি?না বাড়েনি,ইন্ডাস্ট্রি ১০ বছর আগের মতোই আছে।বিশেষ করে আমাদের পশ্চিমবঙ্গে তো ইন্ডাস্ট্রি বাড়েই নি।তাহলে ছেলেরা ইঞ্জনিয়ারিং (Engineering)পড়ার পর যাবে কোথায়? Jobless হওয়া টাই স্বাভাবিক।আর এখন দেখবেন. টাউনের পাশে ফাঁকা জায়গা আছে! কি করবে?একটা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ করে দাও.
More: এবার বিজ্ঞানের (Science) ছাত্রীরাও পাবেন বৃত্তি! নয়া ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
তার ফলে এক একটা টাউনে দুটো বি -টেক কলেজ,৩ টা ডিপ্লোমা কলেজ হয়ে যাচ্ছে।আর সরকার ও সেই রকম অনুমোদন দিয়ে দিচ্ছে।সরকারের এবং নেতা দের পয়সা তো দরকার নাকি!! আর এই পয়সার বিনিময়ে ছাত্র ছাত্রী দের ভবিষ্যৎ গাড্ডায় ফেলে দিচ্ছে।এক তো এখন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ গুলো তে ৭০% সিট ফিলাপ হয় না,অথচ একটার পর একটা নতুন কলেজ খোলার অনুমতি দিচ্ছে সরকার।আজকের দিনে শিক্ষা ব্যবস্থা হলো সব থেকে বড় বিজনেস। আর ওই “শিক্ষার নামেই ভিক্ষা” চাইছে কলেজ গুলো(প্রাইভেট কলেজ).
কই ইন্ডাস্ট্রি করার অনুমোদন তো সরকার দিচ্ছে না,দিলেও সেখানে বিরোধী পার্টি এসে অনশন করবে,মিছিল করবে আর রুলিং পার্টি এবং লোকাল পার্টি কে পয়সা খাওয়াতে হবে। ইন্ডাস্ট্রির জন্য জমি নীতি এতো টাই কমপ্লেক্স করে রেখেছে যে কোনো কোম্পানিই আসতে চাই না বা ইনভেস্ট করতে চাই না।এর ফলে দেশে বেকারত্ব দিনের পর দিন খুবই উর্ধ্বমুখী।বলি হচ্ছে লক্ষ লক্ষ ছাত্র ছাত্রী। আপনি হয়তো জানবেন জাপান এবং চাইনার মতো উন্নত শীল দেশ গুলো তে industrialist যাতে টাকা ইনভেস্ট করে সেই জন্য তাদের সরকার ভর্তুকি দেয়।
এরপর আপনি বিচার করুন লক্ষ লক্ষ ইঞ্জিনিয়ার কেনো job less!
ইঞ্জিনিয়ারদের (Engineering) ভ্যালু এবং কোয়ালিটি:
অবশ্যই ইঞ্জিনিয়ার দের ভ্যালু এবং কোয়ালিটি দুটোই আছে।নাহলে আমাদের দেশ এত উন্নত শীল হতে পারতো না।আর অনেক ইঞ্জিনিয়ার দের ভ্যালু এবং কোয়ালিটি নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠছে,তো বলি.আমি আগেই বলেছি শিক্ষা ব্যবস্থা টা এখন বিজনেস হয়ে গেছে।৪ বছর বিটেক করার পর ইঞ্জিনিয়ারিং (Engineering) কলেজ গুলো ইঞ্জিনিয়ার গড়ে তোলে না,শুধু মাত্র ডিগ্রির সার্টিফিকেট দেই।যেটা আমাদের প্রফেসনাল লাইফে দরকার পড়ে সেটা হলো থিওরি র সঙ্গে সঙ্গে স্কিল টাও শেখানো উচিত ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ গুলো তে কিন্তু সেটা শেখায় না।সবাই কে ওই গ্রেড এর পিছনে দৌড়ানো করানো হয়।তাহলে কি করে কোয়ালিটি থাকবে? আর এত সংখ্যক ইঞ্জিনিয়ার প্রতি বছর পাস আউট হচ্ছে, যে ৫০% এর বেশি ইঞ্জিনিয়ার jobless থাকছে,তাহলে ভ্যালু কি করে থাকবে?
বেতন ৮- ১০ হাজার :
এই যে তো এত সংখ্যক ইঞ্জিনিয়ার jobless থাকছে,তার ফায়দা উঠাচ্ছে ছোট এবং মাঝারি মাপের কোম্পানি গুলো। কোম্পানি গুলো জানে যে এত সংখ্যক ইঞ্জিনিয়ার আছে যে একটা ঢিল ছুড়লে ১০ টা ইঞ্জিনিয়ার হাজির হবে।একটা ইঞ্জিনিয়ার গেলে ১০ টা ইঞ্জিনিয়ার আসবে কম পয়সায় জব করতে।অন্যান্য দেশে আপনি যদি দেখেন ডিপ্লোমা এবং বি টেক ইঞ্জিনিয়ার দের বেতন একটা নির্দিষ্ট করা থাকে, এর নিচে বেতন দেওয়া যাবে না. যেটা আমাদের দেশে নেই।সবাই কে গাধার মতো খাটিয়ে সঠিক পরিমাপ করে স্যালারি দেওয়া হয় না।
অনেক মেয়েদের বাবা ইঞ্জিনিয়ার ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিতে চাইছে না:
তো তাদের কে বলছি আপনারা সকাল বেলায় উঠে ব্রাশ ব্যবহার করা থেকে শুরু করে রাত্রে ঘুমোতে যাওয়ার সময় পর্যন্ত যে পাখা বা এসি চালান।সব কিছুই ইঞ্জিনিয়ার দের দীর্ঘদিনের কষ্টের ফল। সর্বশেষে একটা কথায় বলবো, ইঞ্জিনিয়ার রা আজকের দিনে পরিস্থিতির শিকার।তাই তাদের সন্মান করতে না পারেন,বদনাম করবেন না।
Engineers are the engines who move the world.