HomeGovt SchemesBurdwan: ১ টাকায় চপ, ২ টাকায় ঘুগনি! পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের হিমাংশুর...

Burdwan: ১ টাকায় চপ, ২ টাকায় ঘুগনি! পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের হিমাংশুর গরম তেলেভাজা

শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি৷ পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের হিমাংশু সেন এখনও ১ টাকাতেই চপ, বেগুনি, ফুলুরির মতো তেলে ভাজা বিক্রি করে চলেছেন৷

WhatsApp Group Join Now
Instagram Profile Join Now
YouTube Channel Subscribe

Burdwan: ১ টাকায় চপ, ২ টাকায় ঘুগনি! হিমাংশুর গরম তেলেভাজা

Burdwan: রান্নার তেল সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম যতই বাড়ুক৷ তার আঁচ যেন লাগে না হিমাংশুর সেনের গায়ে৷ বলা ভাল, হিমাংশু সেনের চপ- বেগুনির গায়ে৷ তাই এই বাজারেও হিমাংশুবাবুর দোকানে এক টাকায় তেলেভাজা বিক্রি হয়৷

শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি৷ পূর্ব বর্ধমানের (Burdwan) জামালপুরের হিমাংশু সেন এখনও ১ টাকাতেই চপ, বেগুনি, ফুলুরির মতো তেলে ভাজা বিক্রি করে চলেছেন৷ লোকসান দূরে থাক, ওই দামে চপ তেলে ভাজা বিক্রি করেই আজ লাখপতি এই ব্যবসায়ী৷ রোজগারে দিশা দেখাচ্ছেন বেকারদেরও।প্রকৃত অর্থেই চপ বেচে ক্ষুদ্র শিল্পের দিশা দেখাচ্ছেন তিনি৷

রান্নার তেল থেকে সব্জি বা অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস৷ অগ্নিমূল্য সবেরই বাজার দর। কিন্তু তাতে কী! বাজার দর নিয়ে বিশেষ মাথাই ঘামাতে চান না পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর থানার পাঁচড়ার চপ-তেলেভাজা বিক্রেতা হিমাংশু সেন। বরং তিনি মনে করেন, এই কঠিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেও ষোল আনা অর্থাৎ ১ টাকা পিস দরে চপও অন্যান্য তেলে ভাজা বিক্রি করেও স্বাচ্ছন্দ্যে দিন চালানো যায়। বাস্তবে সেটা তিনি করেও দেখিয়ে চলেছেন। চপ বিক্রেতা হিমাংশুবাবুর এমন ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডই এলাকার বেকারদের আত্মনির্ভর হওয়ার দিশা দেখাচ্ছে।

জামালপুরের পাঁচড়া গ্রামের দক্ষিণপাড়ায় বাড়ি হিমাংশু সেনের। বাড়ির কাছেই রয়েছে তাঁর চপ-তেলে ভাজার দোকান। প্রতিদিন বিকেল ৩ টেয় খুলে যায় তাঁর চপের দোকান। পরিবারের সবাই মিলে দোকান চালান। দোকানের এক ধারে বসে গ্যাসের উনুনে গরম তেলের কড়াইয়ে ফুলুড়ি, সিঙারা , ভেজিটেবল চপ ,আলুর চপ ভাজেন হিমাংশুবাবু নিজে। দাম এক টাকা প্রতি পিস। এছাড়াও ঘুগনি এবং অল্পস্বল্প করে রসগোল্লা, পান্তুয়া, ল্যাংচা  ও মাখা সন্দেশও বিক্রির জন্যে তিনি তৈরি করেন। তবে চপ বিক্রিই তাঁর মূল ব্যবসা।

Google News View Now

Read More : লরিতেই রয়েছে সব ব্যবস্থা, ভ্রাম্যমান রেস্টুরেন্ট(Mobile Restaurant) তৈরি করে তাক লাগালেন বর্ধমানের মেমারির এক বাসিন্দা

দোকান খোলার পর থেকেই খদ্দেরদের ভিড় বাড়তে শুরু করে। ভিড় সামলান হিমাংশু বাবুর স্ত্রী বন্দনাদেবী,ছেলে কাশীনাথ ও পুত্রবধূ শম্পা। চপ তৈরি, ভাজা থেকে শুরু করে বিক্রি- রাত ৯ টা পর্যন্ত সেন পরিবারে ব্যস্ততা থাকে চরমে।

প্রায় ৩০ বছর ধরে ১ টাকা দামে চপ-তেলেভাজা বিক্রি করেই হিমাংশুবাবু ও তাঁর পরিবার এখন এলাকার বিত্তশালীদের মধ্যে একজন হয়ে উঠেছেন। দুর্মূল্যের বাজারেও ১ টাকা পিস দরে চপ-তেলে ভাজা বিক্রি করে লাভের মুখ দেখার রহস্যটা কী?

এই প্রশ্নের উত্তরে হিমাংশু সেন বলেন, ‘আমাদের পরিবার এক সময়ে আর্থিক ভাবে অত্যন্ত দুর্বল ছিল। রোজগারের বিকল্প আর কোনও পথ সেভাবে খুঁজে না পেয়ে বাবা বিশ্বনাথ সেন বাড়ি লাগোয়া জায়গায় চপের দোকান খুলে বসেন। তাঁর বাবা এলাকার মানুষের আর্থিক পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে তখন  ৮০ পয়সা পিস দরে চপ-তেলে ভাজা বিক্রি শুরু করেছিলেন। এর বেশ কয়েক বছর পর তিনি মাত্র ২০ পয়সা দাম বাড়িয়ে ১ টাকা পিস দরেই চপ-তেলেভাজা বিক্রি করে চলেছেন। শুধু এক প্লেট ঘুগনির দাম ২ টাকা।

হিমাংশুবাবুর দাবি , এলাকার গরিব, নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তরাই তাঁর দোকানের ১ টাকা মূল্যের চপ-তেলেভাজা ও ২ টাকা প্লেটের ঘুগনির সবথেকে বড় ক্রেতা। এ ছাড়াও দূর-দূরান্তের ক্রেতারা তো রয়েইছেন।

প্রতিদিন ১০ কেজি বেসনের চপ- তেলেভাজাবিক্রি হয় হিমাংশুবাবুর দোকানে। এর সঙ্গে প্রতিদিন লাগে ১ বস্তা আলু ,৫ কেজি মটর, হাজার টাকার সর্ষের তেল সহ অন্যান্য সামগ্রী। হিমাংশু বাবু জানান, এই সব সামগ্রী কিনে দোকান চালানোর জন্য দিনে তাঁর প্রায় ৩৫০০ টাকার মতো খরচ হয়। ১ টাকা পিস দরে চপ- তেলেভাজা আর ২ টা প্লেট দরে ঘুগনি বিক্রি করেও গড়ে প্রতিদিন  ৫০০- ৭০০ টাকা লাভ থাকে। সেই লাভের পয়সাতেই তিনি সংসার চালানোর পাশাপাশি ছেলেমেয়েদের উচ্চশিক্ষিত করে তুলেছেন।

চপ বিক্রির লাভের পয়সা দিয়েই তিনি পরিবারের সাবেকি বাড়িটিকে ঝাঁ চকচকে বানিয়েছেন। একই সঙ্গে চপের দোকানের লাগোয়া জায়গায় সম্প্রতি নতুন একটি দোতলা বাড়িও তৈরি করেছেন। নূন্যতম মূল্যে অধিক বিক্রিই তাঁর ব্যবসায়িক সাফল্যের চাবিকাঠি।

WhatsApp Group Join Now
Google News View Now
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular