Smart Update24,By Syed Mosharaf Hossain
অ্যামেরিকায় বিখ্যাত জাতীয় উদ্যান ইয়োলোস্টোন। ইয়োলোস্টোনের মাটির নীচে ফুঁসছে দগদগে তরল ম্যাগমা। আর তার ফলে এখানে আছে অনেক গরম জলের প্রস্রবণ আর কুণ্ড। টগবগ করে ফুটছে জল সেখানে অবিরত। কোথাও গরম জল হুস করে ফোয়ারার মত বেরিয়ে আসছে। এই বিভিন্ন রাসায়নিক মেশানো ফুটন্ত গরম জলের কুন্ডগুলোর বাইরের দিকে নীল-সবুজ শ্যাওলার মত দেখতে নক্সা, কোথাও হলুদ, খয়েরি।
এই ইয়োলোস্টোনে ১৯৬৪ সালে একবার ছুটি কাটাতে এলেন অণুজীব বিজ্ঞানী (Microbiologist) থমাস ব্রক। তিনি তখন অণুজীব বাস্তুতন্ত্র নিয়ে খুব আগ্রহী। কোন মাটিতে, কোন জলে কোন রকম ব্যাকটিরিয়া, প্রোটোজোয়া আছে, তা খুঁজে বেড়াচ্ছেন। উনি অবশ্য ইয়োলোস্টোনে সেসব কিছু খুঁজতে আসেননি, এসেছিলেন অন্য পাঁচটা লোকের মত ছুটি কাটাতেই। কিন্তু ঢেঁকি ইয়লোস্টোনে গেলেও ধান ভাঙে। এই নীল-সবুজ আভার নক্সা দেখে থমাস থমকালেন; ভাবলেন, তবে এই গরম জলের কুন্ডে কি আরও অন্য প্রাণ থাকা সম্ভব! ইয়োলোস্টোনের কোন কোন প্রস্রবণ বা কুন্ডের ফুটন্ত জলের তাপমাত্রা তো ৯২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু সেই ফুটন্ত জল বিশ্লেষণ করে থমাস অপার বিস্ময়ে দেখলেন, আগের সমস্ত ধারণা নস্যাৎ করে সেই ফুটন্ত জলেও বিশেষ ধরণের ব্যাকটিরিয়া বহাল তবিয়তে বেঁচে থাকতে পারে। এই ব্যাকটিরিয়ার উনি নাম দিলেন Thermus aquaticus।
আড়াই দশক বাদে থমাসের এই আবিষ্কার বিপ্লব নিয়ে আসবে আণবিক জীববিদ্যা ও জৈবপ্রযুক্তি বিদ্যার। আবিষ্কৃত হবে নতুন এক পদ্ধতি, যে পদ্ধতি রোগ নির্ণয় থেকে অপরাধ বিজ্ঞান, জিনোম সিকুয়েন্সিং থেকে ক্লোনিং, সব কিছুর ক্ষেত্রে অপরিহার্য্য হয়ে উঠবে। হ্যাঁ, PCR এর কথা বলছি।
সোয়াইন ফ্লু বা করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ক্ষেত্রেও যে পদ্ধতির কথা আমরা সবসময় শুনছি, সেই PCR পদ্ধতির আবিষ্কার, মূলনীতি আর করোনার নির্ণয়ে কি করে তার ব্যবহার হচ্ছে, তাই নিয়ে শনিবার আসছে এলেবেলেতে আমার নতুন লেখা-
‘করোনা নির্ণয়ে PCR পদ্ধতি‘
ছবিটি ইয়োলোস্টোন জাতীয় উদ্যানে গ্র্যান্ড প্রিজমাটিক উষ্ণ প্রস্রবণ। আমার তোলা ২০১৮ সালের জুলাই মাসে।