Smart Update24, By Syed Mosharaf Hossain
ভাবুনতো এমন একটা প্রযুক্তি এল যেখানে আপনার গাড়িটি আপনাকে আর চালাতে হবে না বা কোন ড্রাইভার লাগবে না। আপনি শুধু গন্তব্যস্থল টা ঠিক করে দেবেন গাড়িটি আপনাকে আপনার গন্তব্য স্থলে ঠিকমত পৌঁছে দেবে। এমনটা হলে কেমন লাগবে ভাবুন তো? ‘চালকবিহীন গাড়ি’ কল্পবিজ্ঞানের বস্তু বলে মনে হলেও, বাস্তবে এর কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। চলছে পরীক্ষামূলক ব্যবহার। আর এই প্রজেক্ট ‘Google Car’ নিয়ে মাঠে নেমেছে Google। সহযোগিতায় রয়েছে Toyota।
গাড়ির ড্যাশবোর্ডে বোতাম টিপে গন্তব্য ঠিক করে দিলে এই গাড়িটিই পৌঁছে দেবে গন্তব্যে। কীভাবে? সেটাই তো এই গাড়ির অন্যতম রহস্য। গাড়ির ওপরে লাগানো থাকে একটি জাঁদরেল ক্যামেরা-সেন্সর। 360 ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে 64বিম লেসার নজরদারি চালাবে। সামনের গাড়িটি কত স্পিডে চলছে, রাস্তায় হঠাৎ কোন সুন্দরি-ভিআইপি অথবা কোন বৃদ্ধ চলে এলো কি-না, কোথায় বাঁক রয়েছে, কোথায় ডেড এন্ড – এ সবই গাড়ির যন্ত্রমস্তিষ্কে থ্রিডি ইমেজ হিসেবে স্টোর হতে থাকবে। গাড়ির চাকাতেও থাকবে হুইল মোশন সেন্সর। আর থাকবে GPS। এই সব ক’টি মিলিয়ে চলবে Google কার। গাড়ির মেমোরিতে থাকবে ট্রাফিক লাইটের কোনটার মানে কী, কোন রোড সাইনে কী করা উচিত, সে সব।
তো কথা হচ্ছে কি এমন আছে এই গাড়িতে যে এটার এত গুণ! এতসব কাজ কিভাবে গাড়িটি সম্পন্ন করে। আসুন তাহলে জেনে নিই কিভাবে চালকবিহীন গাড়ি কাজ করে। মোটামুটি বেশ লম্বা সময় ধরেই টেক জায়ান্ট গুগল ক্যালিফোর্নিয়ার পাহাড়ি অঞ্চলে নিজেদের প্রধান কার্যালয়ের কাছে চালকবিহীন গাড়ির পরীক্ষা করে যাচ্ছেন এবং তারা অনেকটাই সফল হয়েছেন । চালকবিহীন গাড়ির অনেক রকম সুবিধা আছে এটি আমাদের অনেক ভাবে সাহায্য করবে কিন্তু কথা হচ্ছে এমন কোন পরিস্থিতি হঠাৎ বিগড়োলে সামাল দিতে পারবে তো এই গাড়ি। অবশ্য এই নিয়ে বিস্তর গবেষণা ইতেমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। মানুষ্যচালিত গাড়ির মতো হতে হলে এই গাড়িকে দিতে হবে মানবিক কিছু বৈশিষ্ট্য। সেই লক্ষ্যে এখন অব্দি মোটামুটিভাবে পনেরো লাখ ইউরোর বেশি পয়সা খরচ করে ফেলেছে গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। মানবিক বৈশিষ্ট অর্জনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিলো গাড়িটি আশেপাশের অবস্থা বিবেচনা করবে কিভাবে। এই কিভাবের উত্তর দিয়েছিলেন আইটি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডক্টর রাউল রখাস। তিনি বলেছেন,
স্বয়ংক্রিয় গাড়ি চালনার সবচেয়ে মুশকিল ব্যাপার রাস্তা চেনা বা নেভিগেশন নয়, সে তো আজকালকার সাধারণ গাড়িগুলোও পারে। মুশকিল হলো ট্রাফিক লাইট, ট্রাফিক সাইন আর পথচারীদের চেনা, বিশেষ করে রাস্তায় মানুষজন কোথায় দাঁড়িয়ে, গাড়িকে সেটা জানতে হবে, তার খেয়াল রাখতে হবে।’
প্রযুক্তিবিদদের স্বপ্ন হলো এমন একটি বুদ্ধিমান গাড়ি, যা সাধারণ গাড়ি চালকদের চেয়ে বেশি যুক্তভাবে কাজ করবে। অনেকটা সময় ধরে এসব বিষয় নিয়ে বিজ্ঞানীরা গবেষণা করছেন, এবং মোটামুটি সব ধরনের সম্ভাব্যতার কথা চিন্তা করেই বিজ্ঞানীরা গাড়ির ডিজাইন করে থাকেন। জার্মানির বিখ্যাত গাড়ির ডিজাইনার প্রফেসর লেমার বলেন,
‘স্বয়ংচালিত গাড়ির রহস্য হলো, গাড়িটা ঠিক একজন মানুষের মতো তার পারিপার্শ্বিকের খোঁজখবর রাখতে পারবে। সেজন্য দরকার এমন সব সেন্সর, যেগুলো বিভিন্ন ধরনের আলো, বিভিন্ন ধরনের আবহাওয়ায় কাজ করবে। তাছাড়া ওই গাড়ির একজন গাড়িচালকের মতো অভিজ্ঞতা থাকা চাই- সামনে হয়ত কেউ সিগনাল না দিয়েই মোড় নিচ্ছে। এই তথ্যটিকে প্রযুক্তিগতভাবে সংগ্রহ করে সেই অনুযায়ী কাজ করা, যাতে কোন বিপদ না ঘটে, এটাই হলো স্বয়ংক্রিয় গাড়ি চালানোর মূল বিষয়।’
আশা করা হচ্ছে, 2030 সালের মধ্যেই চালকবিহীন গাড়ি প্রযুক্তি পূর্ণতা লাভ করবে। দেড় দশকের মধ্যেই এই প্রযুক্তি নিরাপত্তাও বাড়বে। তখন ইন্টারনেট-ভিত্তিক এসব চালকবিহীন গাড়ি যাত্রীদের নির্ধারিত স্থানে পৌঁছে দেয়ার পাশাপাশি তাদের সঙ্গে কথা বলা ও বিনোদন প্রদানেও সক্ষম হবে।
আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান । আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন । বিজ্ঞান বিষয়ে আরও পোস্ট পড়তে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক করুন । পুরো পোস্ট টি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।