সৌরজগতের গ্রহরা যেমন সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরে থাকে তেমনি সূর্য নিজের চারিদিকে ঘোরার পাশাপাশি আমাদের মিল্কিওয়ে ছায়াপথের ভেতর দিয়ে নিজস্ব কক্ষপথে গ্যালাক্টিক সেন্টারকে কেন্দ্র করে প্রদক্ষিণ করে।
আমাদের মিল্কিওয়ে এজন্য বলা হচ্ছে কারণ, সূর্য যে ছায়াপথে বিচরণ করে সেই ছায়াপথের নাম মিল্কিওয়ে। মিল্কিওয়ে ছায়াপথ বাদেও মহাবিশ্বে লক্ষ কোটি ছায়াপথ রয়েছে। এই মিল্কিওয়ে ছায়াপথের কেন্দ্রকে বলা হয় গ্যালাক্টিক সেন্টার। এই গ্যালাক্টিক সেন্টারকে কেন্দ্র করে সেকেন্ডে ২২০ কিলোমিটার গতিবেগে সমগ্র সৌরজগৎ নিয়ে সূর্যের একবার ঘুরে আসতে সময় লাগে প্রায় ২২৫ থেকে ২৫০ মিলিয়ন বছর। গ্যালাক্টিক সেন্টারকে কেন্দ্র করে সূর্যের একবার ঘুরে আসার এই সময়কে গ্যালাক্টিক বছর বলে।
হিসাবমতে, সৃষ্টির পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২০-২৫ বার গ্যালাক্টিক সেন্টারকে কেন্দ্র করে সূর্য ঘুরতে পেরেছে। সূর্যের এই কক্ষপথ মোটামুটিভাবে উপবৃত্তাকার। সূর্য ছাড়াও সূর্যের থেকে অনেকগুণ বড় লক্ষ কোটি তারকা রয়েছে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে।
গ্যালাক্টিক সেন্টার থেকে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির পরিব্যাপ্তি প্রায় ১,০০,০০০ আলোকবর্ষ পর্যন্ত। তবে কেন্দ্র থেকে মোটামুটি কাছেই রয়েছে সূর্য। গ্যালাক্টিক সেন্টার থেকে আমাদের সূর্য ২৭,২০০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি দেখতে অনেকটা সর্পিল। কেন্দ্র থেকে এর চারিদিকে প্রধান বাহুগুলো চারিদিকে ছড়ানো। এছাড়া এর অনেকগুলো ছোট ছোট বাহুও রয়েছে। আসলে এই বাহু হল আলোকঅঞ্চল। আমাদের সূর্য এই বাহুর প্রধান দুই বাহু পার্সিয়াস এবং স্যাগিটার্যাস এর মাঝে ক্ষুদ্রতম ওরিয়ন অঞ্চলের কাছে অবস্থিত।
নিজের চারিদিকে ঘোরার পাশাপাশি সূর্য যেভাবে গ্যালাক্টিক সেন্টারকে কেন্দ্র করে উপবৃত্তাকার পথে আবর্তিত হয় তেমনি ঘুরে থাকে আমাদের মিল্কিওয়ে ছায়াপথও। পৃথিবী থেকে আমাদের প্রতিবেশী ছায়াপথ অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি ঘূর্ণনও পর্যবেক্ষণ করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। মহাজাগতিক নিয়ম অনুসারে ঘুরছে মহাবিশ্বের বাকি লক্ষ কোটি ছায়াপথ। কিন্তু এই ছায়াপথ আসলে কাকে কেন্দ্র করে ঘুরছে সে প্রশ্নের এখনো স্পষ্ট উত্তর পাননি বিজ্ঞানীরা। আগামীতে পাবেন কিনা সেটি অপেক্ষার বিষয়।