জীবনের শেষ জমানো পুঁজি ১৯ লক্ষ টাকা দিয়ে গরিব মেয়েদের কলেজে যাওয়ার জন্য ফ্রি বাস সার্ভিস চালু করলেন এই ডাক্তার
Free bus service: ঘরে বাইরে মেয়েদের প্রতি নিয়ত যুদ্ধ করে যেতে হয়। কখনো স্বাবলম্বী হওয়ার তাগিতে আবার কখনো পড়াশুনা করবার ইচ্ছে সবকিছুর জন্যই মেয়েদের এক কদম বেশি এগিয়ে যেতে হয়।মেয়েদের জন্য বহু মানুষ ভগবানের দূত হিসেবেই এসেছে এবং তাদের সাহায্য করেছে। ঠিক এই রকমই এক মহান ব্যাক্তির কথা আজ শুনবো।
তিনি হলেন আরপি যাদব।আরপি যাদব রাজস্থানের নিম কা থানার একটি হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ। তিনি কোটপুটলি গ্রামেই বসবাস করতেন।৬১ বছরের বৃদ্ধ চিকিৎসকের জীবন আর পাঁচটা মানুষের মতোই কাটছিল। একদিন তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে গাড়ি ভাড়া করে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাচ্ছিলেন।ফেরার সময়ে প্রায় অন্ধকার রাস্তায় বেশ কয়েকজন কলেজছাত্রীদের যেতে দেখেন আরপি।
মানবিকতার খাতিরে তিনি তাদের গাড়িতে বসিয়ে নেন। এতো দেরি করে বাড়ি ফেরার কারণ জিজ্ঞেস করতে বাস্তবের সম্মুখীন হন আরপি।মেয়েরা বলে গ্রাম থেকে তাদের কলেজ যাওয়ার কোনো পাবলিক ট্রান্সপোর্ট না থাকার জন্য তাদেরকে পায়ে হেঁটেই বাড়ি থেকে কলেজ, আবার কলেজ থেকে বাড়ি যাতায়ত করতে হয়।পায়ে হেটে যাওয়ার সময় তারা অনেক অস্বস্তিমূলক পরিবেশের শিকার হন।
যেমন রাস্তার ছেলেরা তাদের সাথে অসভ্য আচরণ করে, অনেক সময় টোন টিটকিরির সম্মুখীন হতে হয়। আবার অনেক সময় পায়ে হেটে কলেজ থেকে বাড়ি যেতে অনেক দেরি হয়ে যায় এবং অনেক সময় সন্ধ্যে হয়ে যায়।মেয়েদের কথা শুনে আরপি যাদবের মন বিষন্ন হয়ে পরে। তিনি মেয়েদের সাহায্যের জন্য কিছু করতে চান। কিন্তু স্বল্প সংখ্যক মেয়েদের জন্য কিছু করে আদতে সমস্যা থেকে কোনো রূপ সমাধান পাওয়া সম্ভব নয়।
তাই তিনি গভীর চিন্তায় মগ্ন হন ও ভাবতে থাকেন এই মেয়েগুলি যদি তার সন্তান হতো তাহলেও কি তিনি এই রকম ভাবে হাতের উপর হাত দিয়ে বসে থাকতে পারতেন। মেয়েদের নিরাপত্তার কথা ভেবে তিনি তার জীবনের শেষ সঞ্চয় টুকু দিয়ে দেন।
নিজের একাউন্টে থাকা ১৯ লক্ষ টাকা দিয়ে আরপি মেয়েদের জন্য ৫২ শীতের একটি বাস কেনেন এবং মেয়েদের নিত্য যাতায়তের জন্য চালু করেন ট্রান্সপোর্ট পরিষেবা (Free bus service)। এই বাসটি তিনি তার গ্রাম থেকে কলেজ ও কলেজ থেকে গ্রাম অবধি যাতায়াত করবে বিনামূল্যে।
অর্থাৎ প্রত্যেকটি মেয়ে নিরাপদে পড়াশুনা চালিয়ে যেতে পারবে। চিকিৎসক আরপি যাদব এই বাসটির নাম রাখেন ফ্রি বেটি বাহিনী বাস সার্ভিস। এই উদ্যোগটি শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালে এবং মানুষের নজরে পরে ২০১৭ সালে।
আরপি যাদবের এই অসাধারণ উদ্যোগকে দিল্লি সরকার সম্মানিত করেন এবং তাকে পুরস্কৃত করেন। সত্যি জায়গায় জায়গায় এই মানুষের জন্য এই রকম উদ্যোগ এটিই প্রমান করে যে এখনো পর্যন্ত মানুষের মানবিকতা ভাব শেষ হয়ে যায়নি।