HomeGovt Schemesযে কারণে চাঁদের মাটিতে ইউজিন মেরেলা শোমেকারকে (Eugene Merrill Schumacher) সমাহিত করা...

যে কারণে চাঁদের মাটিতে ইউজিন মেরেলা শোমেকারকে (Eugene Merrill Schumacher) সমাহিত করা হয় তাকে।

WhatsApp Group Join Now
Instagram Profile Join Now
YouTube Channel Subscribe

১৯৬৯ সালের ২১ জুলাই চাঁদের মাটিতে প্রথম পা রাখেন মার্কিন নভোচারী নীল আর্মস্ট্রং।altab 20210314141827

তারপরে কেটে গেছে ৫২ বছর। মানুষের আগ্রহ কমেনি এতটুকুও। যতই সময় গড়াচ্ছে ততই মানুষ বিস্তারিত তথ্য বিশ্বের সামনে আনছেন। নীল আর্মস্ট্রংয়ের পর আরও ১০জন চাঁদে গিয়েছেন ৷ সবচেয়ে বেশি বয়সে চাঁদে পা রাখেন অ্যালান শেপার্ড ৷ তখন তার বয়স ছিল ৪৭ বছর ৮০ দিন ৷ তবে চাঁদের মাটিতে শায়িত হয়েছেন একমাত্র ব্যক্তি ইউজিন মেরেল শোমেকার (Eugene Merrill Schumacher)।


২৮ এপ্রিল ১৯২৮ সাল, আমেরিকায় জন্মগ্রহণ করেন ইউজিন মেরেলা শোমেকার।

জ্যোতির্বিজ্ঞানী হিসেবে বেশ নাম-ডাক ছড়িয়েছিলেন তিনি। তবে তার খ্যাতি এসেছিল ৫১ বছর বয়সে। এর আগে তেমনভাবে লোকচক্ষুর সামনে আসেননি। মার্কিন ভূ-তত্ত্ববিদ এবং গ্রহ বিজ্ঞানের অন্যতম এক প্রতিষ্ঠাতা ইউজিন মেরেল শোমেকার। তিনিই পৃথিবীর একমাত্র ব্যক্তি, যাকে সমাহিত করা হয় চাঁদের মাটিতে।


শেষ জীবন মহাকাশ এবং পৃথিবীর প্রাকৃতিক উপগ্রহের উপর গবেষণা করে কাটিয়ে দিয়েছেন।

চাঁদ নিয়ে ইউজিনের কৌতূহলের শেষ ছিল না। সেখানকার মাটি-পাথর সবকিছু নিয়েই গবেষণা চালিয়েছেন তিনি। তার ইচ্ছা ছিল চাঁদের মাটিতে পা রাখবেন। ১৯৬০ সাল থেকে নাসার সঙ্গে কাজ শুরু করেন ইউজিন। অ্যাপোলো মিশনসহ নাসার বিভিন্ন প্রকল্পের সাফল্যের জন্য তার সমস্ত জ্ঞান উজার করে দিয়েছিলেন। বিভিন্ন গবেষণার পাশাপাশি নভোচারীদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়া সব কাজ একাই সামলাচ্ছিলেন নিজ হাতে।

Group Cards
Google News View Now

১৯৯৪ সালে বৃহস্পতির উপর বিধ্বস্ত হওয়া ধূমকেতুটি তার নামেই (শোমেকার-লেভি ধূমকেতু) বিখ্যাত হয়েছিল।Gene Shoemaker

১৯৯৪ সালের জুলাইয়ে এ ধূমকেতুটি বৃহস্পতিতে আসে। আর এটি আবিষ্কার করেছিলেন ইউজিন। সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী ক্যারোলিন এস শোমেকার ওডেভিড এইচ লেভি। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপের জ্যোতির্বিজ্ঞান গবেষণা প্রোগ্রামের প্রথম পরিচালক হন। সেই সঙ্গে আমেরিকান নভোচারীদের প্রশিক্ষণও দিতেন। তবে নিজের চাওয়া পূর্ণ করতে পারেননি।


অ্যাপোলো মুনের একটি ফ্লাইটের সম্ভাব্য প্রার্থী ছিলেন। তবে অ্যাডিসন (অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির একটি ব্যাধি) রোগ থাকার কারণে সনাক্তকরণে তাকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। ইউজিনের চাঁদে যাওয়ার স্বপ্ন ভেঙে যায়। তবে মনোবল হারাননি। আরো যেন আগ্রহ পেয়েছিলেন প্রশিক্ষণ দিতে। নিজের সবটুকু জ্ঞান উজার করে দিতে চেয়েছিলেন নভোচারীদের মধ্যে। তাদের চোখেই দেখতে চেয়েছিলেন স্বপ্নের চাঁদের মাটি।


প্রথম দিকে অ্যাপোলো মিশন- অ্যাপোলো ৮ এবং অ্যাপোলো ১১ মিশনের সময় সিবিএস নিউজ টেলিভিশন ভাষ্যকার ছিলেন। ওয়াল্টার ক্রোনকাইটের সঙ্গে উপস্থিত থেকে ইউজিন বিশেষ এ ফ্লাইটগুলোর লাইভ কভারেজ দেন। ১৯৬৯ সালে পৃথিবীর কক্ষপথে অতিক্রমকারী গ্রহাণু নিয়ে একটি পদ্ধতিগত অনুসন্ধান শুরু করেছিলেন ইউজিন। যার ফলশ্রুতিতে অ্যাপোলোসহ বেশ কয়েকটি গ্রহাণুর আবিষ্কার ঘটে ইউজিনের হাত ধরে। ১৯৭৫ সালে ইউজিন জ্যেতির্বিজ্ঞানে অবদান রাখায় ফ্রাঙ্কলিন ইনস্টিটিউট থেকে তিনি ‘জন প্রাইস ওয়েদারিল’ মেডেলপ্রাপ্ত হন।

download 6


১৯৯৭ সালের ১৮ জুলাই এক গাড়ি দুর্ঘটনার নিহত হন ইউজিন। তার স্ত্রীও গুরুতর আহত হন। ইউজিনের চাঁদে যাওয়ার স্বপ্ন কখনো পূরণ হয়নি! এ বিষয়ে তার সহকর্মীরা দুঃখবোধ করেন। অবশেষে তারা সিদ্ধান্ত নেন, ইউজিনের মৃতদেহ চাঁদের মাটিতে সমাহিত করা হবে। নাসায় প্রশংসনীয় সব অবদান রাখায় ইউজিনের প্রতি সম্মান জানাতে তাকে চাঁদে সমাহিত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে লাশ নিয়ে যাওয়া কষ্টসাধ্য হবে বলে, আগে তাকে পোড়ানো হয়। এরপর তার পোড়ানো ছাই নিয়ে যাওয়া হয় চাঁদে।


১৯৯৮ সালের জানুয়ারি মাসে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছানোর লক্ষ্যে ‘লন্ডার প্রসপেক্টর’ নামক একটি রকেট ইউজিনের মৃতদেহের ছাই বহন করে ছুটতে শুরু করে। ইউজিন শোমেকারের দেহের ছাই সেলেস্টিস নামের একটি সংস্থা কর্তৃক উত্পাদিত বিশেষ পলিকার্বোনেট ক্যাপসুলের মধ্যে রাখা ছিল। যা মৃত মানুষকে মহাশূন্যে পাঠানোর ক্ষেত্রে কার্যকরী ছিল।


এ ক্যাপসুলের বাইরের অংশে তার নাম, জন্ম ও মৃত্যু তারিখ লেখা ছিল।

লুনার প্রসপেক্টর রকেটটি ১৯৯৯ সালের ৩১ জুলাই চাঁদে পৌঁছায়। এরপর নভোচারী সেখানে পৌঁছে ইউজিন মেরেল শোমেকারের মৃতদেহের ছাঁই ভরা ক্যাপসুলটিকে চাঁদের মাটিতে সমাহিত করে। এভাবেই জ্যোতির্বিজ্ঞানীকে চাঁদে কবর দেয়া হয়। ইউজিনই একমাত্র ব্যক্তি, যার সমাধিস্থ করা হয় চাঁদে। সশরীরে চাঁদের মাটিতে পা রাখার স্বপ্ন পূরণ হয়নি, তাতে কি! মৃত্যুর পর তার ঠিকানা হয়েছে পৃথিবী থেকে কোটি কোটি মাইল দূরে তার স্বপ্নের গ্রহে।


 

WhatsApp Group & Google News Flow
WhatsApp Group Join Now
Google News View Now
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular