আমরা প্রায়ই সিনেমা বা কার্টুনে জলদস্যুদের দেখতে পাই। সিনেমা বা কার্টুনে জলদস্যু চেনির একমাত্র উপায় হলো তাদের একচোখ কালো পর্দা দিয়ে ঢাকা থাকে। আমরা হয়ত মনে করি যে তাদের একচোখ হয়ত নষ্ট। কিন্তু সব জলদস্যুদের একচোখ নষ্ট, এইটা কিভাবে সম্ভব? না মোটেও সম্ভব না।
এর পিছনেও বিজ্ঞান আছে।
এক্ষেত্রে জলদস্যুদের একটা বিরাট বুদ্ধিমত্তার পরিচয় পাওয়া যায়। তার আগে একটা কথা বলি। মনে করেন, অনেকক্ষণ ধরে লোডশেডিং, পুরো গভীর অন্ধকারে অনেকক্ষণ ধরে বসে আছেন। হঠাৎ বিদ্যুৎ আসায় আপনার ঘরের লাইট জ্বলে উঠলো। তো তখন কিন্তু হঠাৎ করেই আপনার দেখতে সমস্যা হবে মানে কিছুক্ষণ ধরে আপনি স্পষ্ট দেখতে পাবেন না। আবার যদি অনেক আলো থেকে অন্ধকারে যান সেক্ষেত্রেও কিন্তু এই একই ব্যাপার ঘটে।
আমাদের চোখ কিন্তু দেখার কাজে দক্ষ। মানে আলোতেও দেখতে পায় আবার মোটামুটি অন্ধকারেও দেখতে পায়। আমাদের চোখের কর্নিয়ার কেন্দ্রস্থলে মাংসপেশিযুক্ত মণি বা তারারন্ধ্র থাকে। এটি গোলাকার ছিদ্রপথ। মাংসপেশির সংকোচন ও প্রসারণে তারারন্ধ্র্রের আকার পরিবর্তিত হয়। যেটা চোখের মধ্যে কতটুকু আলো প্রবেশ করবে সেটা নিয়ন্ত্রণ করে । ঘুটঘুটে অন্ধকারে তারারন্ধ্র সর্বাধিক প্রসারিত এবং তীব্র আলোতে সর্বাধিক সংকুচিত হয়ে থাকে। এই সংকুচিত বা প্রসারিত হতে চোখ কিছুটা সময় নেয়। মানে আলো থেকে হঠাৎ অন্ধকারে গেলে বা অন্ধকার থেকে হঠাৎ করে আলোতে গেলে চোখ আলোর পরিমানের সাথে খাপ খাওয়াতে চোখ বেশ কিছুটা সময় নেয়।
কিন্তু জলদস্যুদের যেহেতু সব পরিস্থিতির সাথে মোকাবেলা করতে হয় তাই চোখকে দেওয়ার মতো এতোটা সময় তাদের নেই। কখন আলো বা কখন অন্ধকারে থাকতে হবে সেটা তারা নিজেরাই জানেনা। তাই তারা একচোখ ঢেকে রাখে। তাদের একচোখ আলোতে অভ্যস্ত রাখে আরেক চোখ অন্ধকারে। যখন সে অন্ধকারে যাবে তখন তার যে চোখ অন্ধকারে অভ্যস্ত ছিল সেই চোখের পট্টি টা খুলে দিবে। তাহলে অন্ধকারের সাথে খাপ খাওয়াতে আর সময় লাগবে না। জলদস্যুদের ইতিহাস কিন্তু অনেক পুরনো। তাই অনেকদিনের অভিজ্ঞতার ফলে তারা এই অসাধারণ উপায় উদ্ভাবন করেছে।