গলদা চিংড়ি ধরতে গিয়ে তিমির (whale’s) পেটে, ৩০ সেকেন্ড পর প্রাণ নিয়ে বেরিয়েও এলেন ইনি
দৈত্যাকার তিমির (whale’s) একবেলার খাবার হতে হতেও বেঁচে ফিরলেন এক ব্যক্তি। সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে একটি হাম্পব্যাক তিমির কবলে পড়েন তিনি। হাঁ করে তাঁকে গিলে নেয় তিমিটি। কিন্তু আস্ত মানুষ গিলতে না পেরে কয়েক মুহূর্ত পরই ওই ব্যক্তিকে উগরে দেয় সে। মৃত্যুর মুখ থেকে প্রাণ নিয়ে ফিরে এসে ভাগ্যকেও বিশ্বাস করতে পারছেন না ওই ব্যক্তি।
শুক্রবার আমেরিকার ম্যাসাচুসেটসের দ্বীপে এই ঘটনা ঘটেছে। পেশায় মৎস্যজীবী ৫৬ বছরের মাইকেল প্যাকার্ড তাঁর এক সহযোগীকে নিয়ে সমুদ্রে গলদা চিংড়ি ধরতে গিয়েছিলেন। মাইকেল এক জন ডুবুরিও। গভীর জলে নেমে গলদা ধরেন। তা করতে গিয়েই শুক্রবার জলের নীচে ঝাঁকুনি অনুভব করেন। আচমকা একটা ধাক্কা খেয়ে চারিদিক অন্ধকার হয়ে যায় তাঁর।
মাইকেল যেখানে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন, সেখানে হাঙরের আনাগোনা রয়েছে। তাই হাঙরই তাঁকে মুখে পুরেছে বলে প্রথমে ভেবেছিলেন মাইকেল। কিন্তু পর ক্ষণেই বুঝতে পারেন হাঙর নয়। শরীরে তেমন কোনও যন্ত্রণাও অনুভব করেননি বলেও জানান মাইকেল।
শুধু তাই নয়, তিমির (whale’s) মুখের ভিতরে তাঁর শ্বাস-প্রশ্বাসও চলছিল বলে জানিয়েছেন তিনি। এ ভাবে কয়েক মুহূর্ত যখন কী করবেন ভাবছেন মাইকেল, সেই সময় আচমকাই তাঁকে উগরে বের করে দেয় তিমিটি। তিমির মুখ থেকে ছিটকে পড়ে কোনও রকমে সাঁতার কেটে সহযোগীর কাছে পৌঁছন তিনি।
তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। তবে অল্পবিস্তর ব্যথা ছাড়া শরীরে আর কোনও সমস্যাই দেখা দেয়নি তাঁর। হাসপাতাল থেকে নিজেই নেটমাধ্যমে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন মাইকেল। এমন ‘আজব’ ঘটনা দেখে সঙ্গে সঙ্গে হামলে পড়েন সকলে।
সংবাদমাধ্যমে মাইকেল জানিয়েছেন, মাছ ধরতে প্রায় ৪৫ ফুট নীচে চলে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই তাঁকে মুখের মধ্যে পুরে নেয় তিমিটি। তিনি বলেন, ‘‘এক ধাক্কায় চোখের সামনে সব অন্ধকার হয়ে যায়। প্রথমে হাঙর ভেবেছিলাম। তার পর বুঝতে পারি তিমি। আমাকে গিলে খাওয়ারর চেষ্টা করছিল।
ঈশ্বরকে ডাকতে শুরু করি আমি। ভেবেই নিয়েছিলাম, মৃত্যুর দিকে এগোচ্ছি। ও ভাবে প্রায় ৩০ সেকেন্ড মতো ছিলাম।’’ ঘটনার সময় মাইকেলের সঙ্গে ছিলেন তাঁর সহযোগী জোসিয়া মেয়ো। তিমিটি যখন মাইকেলকে উগরে বার করে দেয়, সেই সময় জলে আলোড়ন দেখতে পান বলে ঘনিষ্ঠদের তিনিও জানিয়েছেন।
তবে সংবাদমাধ্যমের সামনে আসতে রাজি হননি তিনি। মাইকেলের দাবি উড়িয়ে দেওয়ার প্রশ্ন নেই বলে জানিয়েছেন ম্যাসাচুসেটসের প্রোভিন্সটাউনের সেন্টার ফর কোস্টাল স্টাডিজের তিমি বিশেষজ্ঞ জুক রবিনস। তিনি বলেন, ‘‘এটা মিথ্যে গল্প বলে মনে করি না আমি। যাঁদের সঙ্গে এটা ঘটেছে, তাঁদের চিনি আমি। প্যাকার্ড ভুল সময়ে ভুল জায়গায় ছিলেন। ভাগ্য ভাল বেঁচে ফিরেছেন।’’
জুকের যুক্তি, খিদে মেটাতে হাঁ করে মাছের ঝাঁকের দিকে ছুটে যায় তিমি। তাই একসঙ্গে অনেক মাছ ও জল তার মুখে ঢুকে যায়। তার সঙ্গেই মাইকেল ঢুকে গিয়ে থাকবেন। তবে হাঁ বড় হওয়ায় আস্ত মাইকেলকে মুখে পুরে নিলেও, তিমির গলা সরু ছিল। যে কারণে গিলতে পারছিল না। তাই পরে উগরে দেয়। জুকের মতে, যে তিমিটি মাইকেলকে মুখে পুরে নেয়, সেটির বয়স কম। তাই আস্ত মানুষ মুখে ঢুকেছে বুঝে উঠতে সময় লাগে তার।