১০০০ টাকায় পোর্টেবল অক্সিজেন (invents oxygen) মেশিন বানিয়ে অবাক করল দুর্গাপুরের মায়া বাজারের বিনোদ
Invents oxygen : পরশপাথর শেষে কিনা দুর্গাপুরেই ? দুর্গাপুরের মায়াবাজারের এক যুবকের কেরামতি চিকিৎসাবিজ্ঞান কে এই সংকটকালে অন্তত সেইরকমই দিশা দিচ্ছে। কোভিড আক্রান্ত দেশে মহার্ঘ যখন অক্সিজেন এবং সেই প্রাণবায়ু টুকু জোগাড়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রী সবার মাথা ব্যথার কারণ তখনই প্রায়ই ‘নিখরচাই’ জীবনদায়ী অক্সিজেনের অফুরন্ত ভান্ডার খুঁজে আ্নলো দুর্গাপুরের যুবক।
সারা দেশজুড়ে যখন করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা তখন করোণা আক্রান্ত রোগীদের একমাত্র ভরসাই হল অক্সিজেন । গোটা দেশ তথা রাজ্য জুড়ে চলছে অক্সিজেনের আকাল। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে অক্সিজেন উৎপাদন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এমতো অবস্থায় কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সমস্ত অক্সিজেন প্ল্যান্টের মালিকদেরকে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, তারা যেন তাদের উৎপাদিত সমস্ত অক্সিজেন এখন হাসপাতালগুলিতে সরবরাহ করে।
MORE: NIT Durgapur made Oxygen Concentrator at half price
করোণা আক্রান্ত রোগীদেরকে শ্বাসকষ্ট হলে সময় মতন অক্সিজেন দিতে পারলে বাঁচানো যেতে পারে বলছেন চিকিৎসকরা, আর সেই কথাকে মাথায় রেখে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে চলছে অক্সিজেনের যোগান এর চেষ্টা । রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃতীয়বারের জন্য শপথ গ্রহণ করার পরেই কড়া সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করেছেন করোণা আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা কমানোর জন্য। ইতিমধ্যেই তিনি নতুন নির্দেশিকা জারি করেছেন। রাজ্যের ৬ টি জেলায় ২২ টি সরকারি হাসপাতালে গড়ে উঠবে ১০০০ লিটার উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন অক্সিজেন প্ল্যান্ট । ইতিমধ্যেই বিদেশ থেকে আনা হয়েছে কয়েক হাজার টন অক্সিজেন।
অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণে দুর্গাপুরের সি.এম.ই.আর.আই ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যেই বানিয়ে ফেলেছেন অক্সিজেন (invents oxygen) প্রস্তুতকারক মেশিন যা বায়ুমণ্ডল থেকে অক্সিজেন টেনে রোগীকে দিতে পারবে লাগাতার । ওই যন্ত্রগুলি বানাতে খরচ প্রায় ২৫,০০০ টাকার মত। এরইমধ্যে দুর্গাপুরের ডি.টি.পি.এস, মায়া বাজার,সুকান্তপল্লীর বিনোদ কুমার সাউ তাক লাগিয়ে দিলেন তার অভিনব অক্সিজেন প্রস্তুতকারক মেশিন আবিষ্কার করে।
এই মেশিন থেকে ঘণ্টায় ৪ কেজি অক্সিজেন উৎপাদন করা যাবে বলে বিনোদ দাবি করেছেন। বিনোদ কুমার সাহু কম্পিউটার হার্ডওয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে আসানসোল জজ টেলিগ্রাফ ইন্সটিটিউট থেকে পাস করে। বিনোদ নিজের প্রচেষ্টাতেই বাড়িতে বসেই বানিয়ে ফেলেছেন এই পোর্টেবল অক্সিজেন মেশিন। বিনোদ জানিয়েছেন তার এই মেশিনটি তৈরি করতে মাত্র ১০০০ টাকা খরচা হয়েছে। বিনোদ ইতিমধ্যেই দুইজন ব্যক্তির ওপর তার পোর্টেবল অক্সিজেন মেশিন প্রয়োগ করে ভাল ফল পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রধানমন্ত্রীকে দুটি পৃথক ই-মেইল করে তার আবিষ্কারের পুরো ঘটনার বিস্তারিত ভাবে জানিয়েছেন । এবং অনুরোধ করেছেন যাতে অবিলম্বে তার এই পোর্টেবল অক্সিজেন মেশিন প্রচেষ্টাটি দেখে শ্বাসকষ্ট থাকে করোণা আক্রান্ত রোগীদেরকে দ্রুত সুস্থ করা যায় এই মেশিন ব্যবহার করে। বিনোদ জানান, যদি সরকারিভাবে তার এই মেশিনের কার্যকরিতা প্রমাণ হয়, তাহলে তিনি প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ টি করে মেশিন তৈরি করে তুলে দিতে পারবেন করোণা আক্রান্ত রোগীদের সেবায়।
তবে বিনোদ জানান, তার কাছে নির্দিষ্ট অক্সিজেনের গ্রেট মাপার যন্ত্র না থাকায় তিনি সে কাজটি করতে পারছেন না । তাই তার অনুরোধ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত সংস্থার কাছে যাতে তারা যথাযথভাবে এই মেশিনটি কে পরীক্ষা করে এবং তার অক্সিজেনের গ্রেড চেক করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব করোনা আক্রান্ত রোগীর সেবায় লাগাতে পারেন তার জন্য সচেষ্ট হন ।