HomeGovt Schemesইতিহাসে উপেক্ষিত এক বীরাঙ্গনা ঝলকরিবাই।

ইতিহাসে উপেক্ষিত এক বীরাঙ্গনা ঝলকরিবাই।

WhatsApp Group Join Now
Instagram Profile Join Now
YouTube Channel Subscribe

Jhalakaribai is one of the neglected heroines in history.


১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের কথা উঠলেই আমাদের সবার প্রথমে মনে আসে ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাইয়ের কথা।rani jhalkari bai and lakshmi bai

কিন্তু উপেক্ষিত থেকে যান ঝলকারিবাই। কিছুদিন আগে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘মণিকর্ণিকা’ ছবিটির সূত্রে অবশ্য কেউ কেউ চিনেছেন এই চরিত্রটিকে। তবে ইতিহাস যে তাঁকে প্রাপ্য মর্যাদা দেয়নি তা বলাই বাহুল্য। ‘মণিকর্ণিকা’ ছবিতে লক্ষ্মীবাইয়ের ভূমিকায় কঙ্গনা রানাউতের পাশাপাশি ঝলকারিবাই-এর চরিত্রে দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন অঙ্কিতা লোখান্ডে। আজ বিস্মৃতির ধুলো ঝেড়ে আমরা ইতিহাসে উপেক্ষিতা ঝলকারিবাইয়ের আখ্যান ফিরে দেখব।


ঝলকারিবাই তৎকালীন ঝাঁসি রাজ্যের ভোজলা গ্রামে ১৮৩০ খ্রিস্টাব্দের ২২শে নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন৷

তাঁর পিতা ছিলেন সাদোভা সিং এবং মা যমুনা দেবী। খুব ছোটবেলায় তাঁর মা মারা যান। মাতৃহীন কন্যাকে পরম স্নেহে মানুষ করতে থাকেন পিতা সদোভা সিং। গরীব ও নিম্নবর্গের মহিলা হওয়ায় বিদ্যালয়ে প্রবেশের সুযোগ তাঁর কপালে ঘটেনি৷ শৈশবকাল থেকেই অত্যন্ত দামাল প্রকৃতির ছিলেন তিনি। নিজের চেষ্টাতেই শিখেছিলেন ঘোড়সওয়ারি, শিকার করা। একবার জঙ্গলের মধ্যে একটি বাঘকে কেবলমাত্র কুড়াল দিয়ে তিনি হত্যা করেন। এই কাহিনি ধীরে ধীরে স্থানীয়দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে আশেপাশের গ্রামে চোর-ডাকাত পড়লে কিংবা কোনো বন্য জন্তু আক্রমণ করলে সবার প্রথমে তাঁর ডাক পড়ত৷ যা আজকাল প্রায় কিংবদন্তিতে পরিণত।

Group Cards
Google News View Now

রানি লক্ষ্মীবাইয়ের সেনাবাহিনীর আর্টিলারি ইউনিটের সেনা অহতিশাম খান, ঝলকারিবাইয়ের সঙ্গে রানির পরিচয় করিয়ে দেন।

পরবর্তীতে তিনি এই অহতিশাম খানকেই বিয়ে করেন। ঝলকারিবাইয়ের রণদক্ষতায় মুগ্ধ হয়ে ঝাঁসি’র রানি তাঁকে সেনাবাহিনীর মহিলা শাখায় অন্তর্ভুক্ত করেন। এখানে তিনি ধীরে ধীরে শেখেন গুলি চালানো ও কামান দাগার কৌশল। রণকৌশলে অত্যন্ত নিপুণা এই মহিলার সঙ্গে রানির শারীরিক গঠনগত মিল এতটাই প্রবল ছিল যে অজানা কেউ চট করে তাঁদেরকে আলাদা করতে পারতেন না। মহাবিদ্রোহের সময় জেনারেল হিউ রোজ ঝাঁসি আক্রমণ করেন। ঝাঁসি’র দুর্গের একটি ফটকের দায়িত্বে থাকা দুলা জু বিশ্বাসঘাতকতা করে ব্রিটিশ বাহিনীর জন্য দুর্গের দরজা উন্মুক্ত করে দেন। দরবারিদের পরামর্শে রানি অন্য একটি দরজা দিয়ে পলায়ন করেন৷ এইসময় ঝলকারিবাই, রানি লক্ষ্মীবাইয়ের ছদ্মবেশে জেনারেল রোজের শিবিরের উদ্দেশ্যে রওনা হন এবং নিজেকে রানি বলে ঘোষণা করেন। এতে ইংরেজদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়, যা সারাদিন অব্যাহত থাকে। ফলে রানি নিরাপদ দূরত্বে পালিয়ে যেতে সফল হন।


এই বীর নারীর মৃত্যু নিয়ে খানিকটা বিভ্রান্তি রয়েছে। কারও কারও মতে, তিনি ১৮৫৮ সালে মাত্র ২৭ বছর বয়সে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাণ বিসর্জন৷ দেন।

আবার কারও মতে তিনি ১৮৯০ সাল পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। একে তো মহিলা, তার ওপর আবার দলিত। তাই ভারতীয় রাজনৈতিক ইতিহাসে তিনি ছিলেন উপেক্ষিত। তবে সাম্প্রতিক সময়ে উত্তর ভারতে ঝলকারিবাইয়ের গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। তাঁর মৃত্যু বার্ষিকী বিভিন্ন কোলি সংগঠন শহীদ দিবস হিসেবে পালন করে। বুন্দেলখণ্ডকে একটি পৃথক রাজ্য হিসাবে প্রতিষ্ঠার আন্দোলনও ঝলকারিবাইয়ের কিংবদন্তিকে বুন্দেলি পরিচয় তৈরি করতে ব্যবহার করেছে। ভারত সরকারের ডাক ও টেলিগ্রাফ বিভাগ ঝলকারিবাইয়ের ছবিসহ একটি ডাকটিকিট প্রকাশ করেছে। ২০১৭ সালে আমাদের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ভোপালে তাঁর একটি মূর্তি উন্মোচন করেন।


 

WhatsApp Group & Google News Flow
WhatsApp Group Join Now
Google News View Now
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular