দেশি রোবট শালু বাংলা সহ ৪৭টি ভাষায় কথা বলে হাসে, দুঃখে কাঁদেও, Desi robot Shanu speaks 48 languages including Bengali:
Smart Update24,By Syed Mosharaf Hossain: নাম তার শালু। গুণে এক্কেবারে সরস্বতী। তাকে নিয়ে মজে নেট দুনিয়া। তবে শালু কোনও রক্ত-মাংসের মহিলা নয়—যন্ত্রমানবী। ফেলে দেওয়া জিনিসপত্র দিয়ে তাকে তৈরি করেছেন দীনেশ প্যাটেল নামে এক শিক্ষক। তিনি আইআইটি মুম্বইয়ের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সের শিক্ষক।
শালুকে নিয়ে কেন এত তোলপাড় নেটবিশ্বে? তার সৃষ্টিকর্তা জানিয়েছেন, দেশের ন’টি ভাষার পাশাপাশি ৩৮টি বিদেশি ভাষাতেও গড়গড় করে কথা বলে যেতে পারে এই যন্ত্রমানবী। দেশি ভাষার মধ্যে রয়েছে হিন্দি, ভোজপুরী, মারাঠি, বাংলা, গুজরাতি, তামিল, তেলুগু ও মালয়ালম। শুধু ভাষাতেই নয়, কাজেও পারদর্শী শালু। মানুষের মতো একাধিক কাছে স্বচ্ছন্দ সে। হাত মেলাতে পারে। হাসি মুখে কথা বলতে পারে। আবার রাগ-অভিমান দেখানোর মতো একাধিক অভিব্যক্তিও প্রকাশ করে এই রোবট।
দীনেশ জানিয়েছেন, মানুষকে অভিবাদন জানাতে সক্ষম এই যন্ত্রমানবী। এছাড়া, খবরের কাগজ পড়তে, রান্নার রেসিপি আওড়াতেও পারে সে। এখানেই শেষ নয়, একবার কাউকে দেখলে তাকে মনে রাখার ক্ষমতা রয়েছে শালুর। তার স্মৃতিশক্তিও নাকি প্রখর। সাধারণ জ্ঞানের যে কোনও প্রশ্নের উত্তরও একেবারে ঠোঁটস্থ।
হঠাত্ই কেন এই ধরনের একটি রোবট তৈরি করলেন? জবাবে দীনেশ জানিয়েছেন, রজনীকান্তের ছবি ‘রোবট’ দেখেছিলেন তিনি। তারপরই সিনেমার মতো একটি হিউম্যানয়েড তৈরির পরিকল্পনা তাঁর মাথায় আসে। তার পরেই কাজে লেগে পড়েন। ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক, কার্ডবোর্ড, কাঠ, অ্যালুমিনিয়াম ও ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম দিয়েই শালুকে তৈরি করেছেন তিনি। তিন বছরের পরিশ্রমের ফসল এই যন্ত্রমানবী। খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকার মতো। হংকংয়ের হ্যানসন রোবোটিক্স ‘সোফিয়া’ নামে একটি যন্ত্রমানবী তৈরি করেছিল। সেই সোফিয়ার সঙ্গে শালুর বিশেষ কোনও ফারাক নেই বলে দাবি তার নির্মাতার।
দীনেশের মতে, স্কুলে পড়ানো এবং অফিসে রিসেপশনিস্টের কাজে ভালো বিকল্প হতে পারে শালু। তবে আরও গবেষণা করলে এটি মানবজীবনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনে দিতে পারে বলে আশাবাদী তিনি। গুণগত মানের সঙ্গে যন্ত্রমানবীর মুখাবয়বেরও বদল আনতে চাইছেন দীনেশ। তাঁর কথায়, আপাতত প্লাস্টার অব প্যারিস দিয়ে শালুর মুখ তৈরি করা হয়েছে। তাই তা নিখুঁত হয়নি। মুখোশ ব্যবহার করে সেই খামতিও এড়ানো যাবে।
দীনেশের এই আবিষ্কারে উচ্ছ্বসিত শিক্ষাবিদ-গবেষকরা। শালুর ব্যাপারে জানতে পেরে তাঁকে চিঠি লিখেছেন আইআইটি মুম্বইয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক সুপ্রতীক চক্রবর্তী। তিনি লিখেছেন, ‘এটি একটি দারুণ সৃষ্টি। শিক্ষা, বিনোদন সহ একাধিক ক্ষেত্রে এই ধরনের রোবট ব্যবহার করা যায়। পরবর্তী প্রজন্মের বিজ্ঞানীদের জন্য শালু অনুপ্রেরণা।