5 groundbreaking discoveries that are going to revolutionize medical science:
দিন যাচ্ছে, তার সাথে প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে সবকিছু। নতুন নতুন জিনিস আবিষ্কার করছে মানুষ। দৈনন্দিন জীবনকে করছে আরো সহজ। আজ থেকে মাত্র কয়েক শত বছর আগের কথা। যখন খুব ছোটখাটো রোগেই শয়ে শয়ে মানুষ মারা যেত। আস্তে আস্তে মানুষ এসব রোগকে প্রতিরোধ করতে শিখেছে। আবিষ্কার করছে নানা প্রতিষেধক ও ঔষধ। ফলে এসব রোগে মানুষের মৃত্যুর হার কমে নেমে এসেছে প্রায় শূন্যের কোঠায়।
কিন্তু তারপরও আবির্ভাব ঘটছে নতুন নতুন রোগের। সামনের দিনগুলোতেও অনেক পরিবর্তন আসবে যা চিকিৎসা বিজ্ঞানকে নিয়ে যাবে আরো অনেক দূর। চিকিৎসা বিজ্ঞানের এমনই কিছু চমকপ্রদ বিষয়ের খবর আজকে আপনাদের জানানো হবে, যেগুলো হয়তো আমরা সামনের বছরগুলোতেই দেখতে পাবো।
১. হিউম্যান হেড ট্রান্সপ্লান্ট (Human Head Transplant:):
চিকিৎসা বিজ্ঞানের সবচেয়ে চমকপ্রদ যে ঘটনাটি ঘটতে যাচ্ছে এই বছরে সেটি হলো হিউম্যান হেড ট্রান্সপ্লান্ট বা মানব মস্তক প্রতিস্থাপন। এতদিন আমরা হার্ট, কিডনি সহ নানা রকম অঙ্গের প্রতিস্থাপনের কথা শুনেছি। কিন্তু সরাসরি পুরো মাথাটিই একজনের শরীর থেকে নিয়ে অন্যজনের শরীরে প্রতিস্থাপন করার ঘটনা মানুষের বেলায় এটাই প্রথম। সার্জিও ক্যানাভেরো নামের একজন ইতালিয়ান নিউরোসার্জন এই জটিল কাজটি করার দুঃসাহস দেখিয়েছেন। এ পর্যন্ত হেড ট্রান্সপ্লান্টের পর কোনো প্রাণীই বেশি দিন বাঁচেনি। কারণ প্রতিস্থাপিত মাথার সাথে শরীরের সবকিছু যুক্ত করা গেলেও যুক্ত করা যেত না স্পাইনাল কর্ড। কিন্তু সার্জিও ক্যানাভেরো এবার একটু ভিন্ন পথে এগোবেন। একটি বিশেষ ব্লেডের সাহায্যে তিনি এই প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন এবং এক্ষেত্রে তিনি একটি বিশেষ জৈব উপাদান যুক্ত গ্লু ব্যবহার করবেন স্পাইনাল কর্ডের নার্ভের বৃদ্ধির জন্য।
২. মেডিক্যাল থ্রিডি প্রিন্টিং(Medical 3D printing):
থ্রিডি প্রিন্টার কিংবা থ্রিডি প্রিন্টিংয়ের কথা হয়তো আমরা অনেকেই জানি। নরমাল পেপার প্রিন্টারের মাধ্যমে আমরা যেমন বিভিন্ন লেখা কম্পিউটারের মাধ্যমে কাগজে প্রিন্ট করি, ঠিক বায়োটেকনোলজি ইন্ডাস্ট্রিগুলো সম্প্রতি কাজ করছে থ্রিডি প্রিন্টারের মাধ্যমে কীভাবে শরীরের কোষ তৈরি করা যায় তা নিয়ে। এই গবেষণায় যদি সফলতা আসে, তবে অদূর ভবিষ্যতে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তৈরি করা সম্ভব হবে থ্রিডি প্রিন্টারের মাধ্যমে। ইতিমধ্যেই এই প্রিন্টারের মাধ্যমে শরীরের হাড় তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন গবেষকরা।
৩. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা(Artificial intelligence):
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) এর বদৌলতে অভাবনীয় পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে সামনের বছরগুলোতে। বর্তমানে স্মার্টফোনগুলোর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন অ্যাসিস্ট্যান্ট আমাদের জীবনকে করেছে অনেক সহজ। ঠিক এভাবেই আগামী দিনগুলোতে এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসা বিজ্ঞানে রাখবে অনন্য ভূমিকা। অসুস্থ হয়ে পড়েছেন? জ্বর, সর্দিকাশি কিংবা ছোটখাটো কোনো অসুখ হয়েছে? ভবিষ্যতে হয়তো আপনাকে আর এসব কারণে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে না। বাড়িতে বসেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন অ্যাসিস্ট্যান্টের মাধ্যমে সহজেই আপনি পাবেন স্বাস্থ্যসেবা।
৪. পরীক্ষাগারে তৈরি অঙ্গ(Laboratory organs):
কোনো কারণে টিকটিকির লেজ খসে পড়লে কিংবা কেটে গেলে ধীরে ধীরে তা আবার গজায়। কিন্তু মানুষের বেলায় এমনটা হয় না। তবে আমাদের শরীরেও এমন কিছু কোষ রয়েছে যা প্রতিনিয়ত নষ্ট হচ্ছে, আবার নতুন তৈরি হচ্ছে। যেমন আমাদের চামড়ার বহিরাবরণের কোষগুলো। আমাদের চামড়ার বহিরাবরণটি প্রতি দুই থেকে চার সপ্তাহ অন্তর অন্তর একবার সম্পূর্ণরূপে উঠে যায়। এরপর আবার নতুন কোষ জন্মায়। চামড়ার ক্ষেত্রে এমনটা হলেও শরীরের কোনো একটি অঙ্গ কিন্তু একবার হারিয়ে ফেললে পুনরায় জন্মায় না।
কিন্তু সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা গবেষণাগারে শরীরের কোষ থেকে কান, নাক প্রভৃতি অঙ্গ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন। এক্ষেত্রে যার জন্য অঙ্গটি তৈরি করা হবে তার দেহ থেকে কিছু কোষ নেওয়া হয়। এরপর উপযুক্ত পরিবেশে কোষটির বিকাশ ঘটিয়ে একটি কোষ থেকে অনেকগুলো কোষ সৃষ্টির মাধ্যমে ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ অঙ্গটি গঠিত হয়। এরপর এই কৃত্রিম অঙ্গটি স্থাপন করা হয় রোগীর শরীরে। কৃত্রিম অঙ্গটি জীবিত কোষ দ্বারা তৈরি বলে আস্তে আস্তে অঙ্গটির মধ্যে শরীরের শিরা-উপশিরা ও স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশ ঘটে। ফলে কৃত্রিম এই অঙ্গটি হয়ে ওঠে দেহের একটি অংশ।
৫. পোর্টেবল ডায়াগনস্টিক ডিভাইস(Portable diagnostic device):
বর্তমানে রক্তের ব্লাড সুগার বা ডায়াবেটিক টেস্ট, রক্তচাপ নির্ণয় ইত্যাদি আমরা ঘরে বসেই করতে পারি। কিন্তু কয়েক দশক আগেও এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আমাদেরকে ডাক্তারের কাছে এবং বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে দৌড়াদৌড়ি করতে হতো। বর্তমানে আমরা ইসিজি, এক্স-রে ইত্যাদির জন্য বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের শরণাপন্ন হই। কিন্তু আগামী বছরগুলোতে আমাদের আর এসবের জন্য বাইরে যেতে হবে না। ঘরে বসেই আমরা এসব পরীক্ষা করতে পারবো পোর্টেবল ডিভাইসের মাধ্যমে। সম্প্রতি গবেষকরা পোর্টেবল ইসিজি মেশিন উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছেন।
এছাড়াও কয়েক বছর আগে ইউজিন চ্যান নামক একজন ডাক্তার ও তার দল মিলে তৈরি করেছিলেন এমন একটি বহনযোগ্য যন্ত্র যেটিতে শুধু এক ফোঁটা রক্ত প্রবেশ করালেই কয়েকশ রোগ নির্ণয় করা যাবে। ডিভাইসটি এতই ছোট যে তা পকেটে করে নিয়ে ঘুরে বেড়ানো যায়। ভবিষ্যতেও আসতে যাচ্ছে ঠিক এমনই অনেক যন্ত্র।